top of page

রবীন্দ্রসাহিত্যে আধুনিকতা

বাসব মুখার্জ্জী



আধুনিকতা বিষয়টা বহুমাত্রিক,বহুস্তরিক।প্রিজমের মতোই দ্যুতিময় তার বর্ণচ্ছটা।আপাতভাবে বহিরঙ্গের চটকচমককেই আমরা আধুনিকতার সংজ্ঞাতে বেঁধে ফেলি,বন্দি করি।কিন্তু অন্তর-অঙ্গ বা অন্তরঙ্গের দৃপ্ত দীপ্তিতেই আধুনিকতার সদর্থক প্রকাশ।"রবীন্দ্রসাহিত্যে আধুনিকতা"র বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বসে এই কথাগুলোই মনের অন্তঃস্থলে ভেসে উঠল।আমাদের জীবনে রবি ঠাকুর নামক বিরাট বটবৃক্ষটিকে ঘিরে বলার মতো আমি কেউই নই,সে স্পর্ধা ও দুঃসাহস কোনওটাই আমার নেই।তবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন ছাত্র হবার সুবাদে যেটুকু রবীন্দ্রসাহিত্য পাঠ এবং অধ্যয়ন করবার সুযোগ পেয়েছি তাতে মনে হয়েছে রবি ঠাকুর বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতাকে আধুনিকতা নয়,বরং মনের মননকেই প্রকৃত আধুনিকতা বলে সংজ্ঞায়িত করতে চেয়েছিলেন।আর তাঁর এই ভাবভাবনারই প্রতিফলন উদ্ভাসন উন্মোচন উদঘাটন উদযাপন হয়েছে তাঁর বিভিন্ন উপন্যাসে ছোটগল্পে নাটকে।তিনি আসলে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে মর্যাদাদানের দিকটিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন।আর তাই 'চোখের বালি'র বিনোদিনী,'চতুরঙ্গ'-এর দামিনী থেকে 'শেষের কবিতা'র লাবণ্যর মতন প্রখর ধীময়ী শ্রীময়ীদির দেখা আমরা পেয়েছি।আবার অন্যদিকে "স্ত্রীর পত্র"র মৃণাল তৎকালীন সময়ে দাঁড়িয়ে যে দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে সেও তো চূড়ান্ত আধুনিক চিন্তনেরই ফসল।'রক্তকরবী'র মূল থিমটাই তো আদিগন্ত এক আধুনিক চেতনাকে তুলে ধরে।রবীন্দ্রসাহিত্যে আধুনিকতা আসলে আমাদের চৈতন্যর আলোকিত সত্তার জারণবিজারণেই সিক্ত।রবীন্দ্রসাহিত্য এক অতলস্পর্শী সমুদ্দুর,তা যে পরিসরেই ধরা হোক না কেন তা অধরাই থেকে যাবে।সেই "অধরা মাধুরী"কে ছোঁয়ার চেষ্টা আসলে "রবি ঠাকুর" নামক আমাদের "প্রাণের মানুষ"কে অন্তরের ভক্তি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবার প্রয়াস।তাঁকে জানাই সশ্রদ্ধ বিনম্র প্রণতি...

লেখক পরিচিতি

বাসব মুখার্জ্জী,রবীন্দ্রমেলার সদস্য।

Kommentare


m4nPNpRzn2BaiWQu_7.jpg

© 2023 by Train of Thoughts. Proudly created with Wix.com

bottom of page