top of page

আমি

পাপিয়া চন্দ্র

ভীষণ অভিমানী আমি। কারো ছোট বড়

কথা সহ্য হয় না আমার। শুধু ভালোবাসতে

পারো না? আমার মতো ভালো নাই

বা বাসলে, খামোখা ব্যথা পেতে রাজি নয়

আমি।

আমিতো ভালবাসি-মাটি, পিঁপড়ে,

কাঠবিড়ালি, প্রজাপতি, চড়াই, শালিক,

গাছপালা। এরা ব্যথা দিতে জানে না।

সেদিন চায়ের কাপের তলায় পড়ে থাকা

চা থেকে মিষ্টি রস আস্বাদন করতে গিয়ে

হাবুডুবু খাচ্ছিল পিঁপড়েটি। চোখে

পড়তেই কাপের বাইরে বার করে আনলাম।

অদ্ভুত অনাবিল আনন্দে ভরে উঠলো আমার

মন। পেরেছি, একটি প্রাণ বাঁচাতে

পেরেছি আমি।


আমি পারি, অনেক কিছুই করতে পারি

আমি। মেঘের উপর দিয়ে ভাসঃতে পারি

আমি,

স্বপ্নে তোমার কাছে যেতে পারি,

সবুজ ঘাসের উপর দিয়ে চলতে পারি,

চাঁদে বসে চরকা কাটতে পারি।

নীল দিগন্ত আর সমুদ্র মিশেছে যেখানে;

সেখানে তোমার সঙ্গে ছুটে যেতে পারি

আমি।


তুমি যদি বলো আরো অনেক কিছুই

করতে পারি আমি।

ইন্দ্রের সভায় গান গাইতে পারি আমি,

কবি পক্ষে আবৃত্তি করতে পারি আমি,

তুমি যদি বলো অনেক কিছুই করতে

পারি আমি।


ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো দিয়ে নকশা কাঁথা

তৈরি করতে পারি, আমি আসলে ফুল

তুলতে পারি আমি।


মা হতে পারি আমি,

সন্তানকে সঠিকভাবে লালন পালন করে

সমাজের সুপ্রতিষ্ঠিত

করতে পারি আমি।

আমাকে বিশ্বাস করো-

আমি পারি। আমি

পেরেছি।

সেদিনের দুপুরটা-সেই বৃষ্টিভেজা দুপুরটা-

প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল।

শ্রেণিকক্ষে দিদিমণি

সেইসময়ের পরিস্থিতিকে নিয়ে কিছু

লিখতে বললেন-লিখলাম-ভিজে চুপসে যাওয়া চড়াইটি

কেমন করে

বারবার নিজের পাখনার সাহায্যে

পাখনার ঝাপটা দিয়ে শুকিয়ে নিচ্ছে নিজেকে।


মাঠে চরাতে যাওয়া গাভীগুলো ফিরে আসতে

চাইছে ঘরে,

আরও কত কি!

আমি লিখতে পারি

বিশ্বাস করতে চাইলেন

না দিদিমণি।

সেই অভিমান

কেন ?

আমি কি পারি না ?

সেই আমি

অনেক কিছুই করতে পারি।

আমাদের স্যার ভীষণ বকলেন একদিন

কেন এরকম হাসছেন? এ সমস্ত মানায় না।

আরও কত কি!

আচ্ছা, আমি কি হাসতে পারি না?

হাসি তো মনের আনন্দ

প্রাণের আরাম।

সেই আমি মনে মনে ভাবলাম,

স্যার বোধহয় আন্তরিকভাবে বকেন নি

তিনি তো অনেক

কিছুই শিখিয়েছেন


সেই আমি

যা পারতাম না-

আজ তা পারি

আমি মানে আমি

ভীষণ অভিমানী।


লেখিকা পরিচিতি

পাপিয়া চন্দ্র, রবীন্দ্রমেলার সদস্যা

コメント


m4nPNpRzn2BaiWQu_7.jpg

© 2023 by Train of Thoughts. Proudly created with Wix.com

bottom of page